বর্ষায়
সিলেটের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ‘রাতারগুল’। জলের
ওপর জঙ্গুলে পরিবেশ তৈরি করেছে একধরনের বুনো সৌন্দর্য। এর
আবেদন অন্য রকম। গা-ছমছম করবে ঠিকই, কিন্তু সে রকম ভয় ধরাবে না। রোমাঞ্চের
শিহরণ জাগাবে, আবার নিবিড় মমতায় জড়াবে। তাই
রাতারগুলের বুনোজলের হাতছানিতে মাতে অন্তরের টান।
রাতারগুল
মূলত জলারবন। সোয়াম্পফরেস্ট। বর্ষায়
এতে ৮-১০ ফুটের
মতো পানি থাকে, শীতে শুকিয়ে যায়। পাঁচ
একর জায়গাজুড়ে এ বন।
জলারবনে হিজল, করচ, বনজাম, জংলিবট আর মুরতা নামের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ছড়াছড়ি। জলমগ্ন
গাছগুলো যেন গলাগলি করে থাকে। গাছের
ডালপালা ছাপিয়ে যাওয়া লতা-গুল্ম মিলে বিশাল এক সবুজ চাঁদোয়া যেন গড়ে তোলে। স্বচ্ছ
জলে এই চাঁদোয়ার ছবি ফুটিয়ে তোলে অপরূপ এক দৃশ্য।
রাতারগুলের
বুনোজল বা জলারবনে ঘুরে বেড়ানোর বাহন নৌকা। আর
ডিঙিটাই জুতসই। জলারবনে
সকালে এক রূপ, বিকেলে আরেক। ভোরের
নরম আলোতে পাখির কলকাকলিতে মনে হবে প্রকৃতির ঘুম ভাঙল। বিকেলটা
আবার শান্ত। অস্তগামী
রবির মরচে ধরা আলো শান্ত জলে তৈরি করে বিদায়বেলার সুর। মুগ্ধ
না হয়ে উপায় নেই।
পাতার
মাঝে ঝিরিঝিরি বাতাসের মিহি সুর, পাখপাখালির ওড়াওড়ি, জলচর পাখির জলবিহার, হুট করে কোনো সাপের সন্তরণ, ধীরলয়ে চলা কোনো নৌকার মাঝির ছপাত ছপাত বইঠা ফেলা—এ রোমাঞ্চের কোনো
শেষ নেই।
বন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় থাকা রাতারগুলে প্রবেশে কোনো ফি দিতে হয় না। এই জলারবনের ভেতর দিয়ে নৌকায় করে যাওয়ার সময় এক
বন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় থাকা রাতারগুলে প্রবেশে কোনো ফি দিতে হয় না। এই জলারবনের ভেতর দিয়ে নৌকায় করে যাওয়ার সময় এক
রোমাঞ্চকর অনুভূতি তৈরি হয়। আঁকাবাঁকা
সারি সারি গাছ আর ঝোপঝাড় অন্য রকম এক মুগ্ধতা ছড়ায়। ঝোপঝাড়ে
রয়েছে নানা ধরনের বন্য পাখি, সাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। চাইলে
পর্যটকেরা নিরিবিলি কোথাও নৌকাটি ভিড়িয়ে চুপচাপ বসে থেকে আপনমনে খানিকক্ষণ প্রকৃতির রূপ উপভোগ করে নিতে পারেন।
জলারবনের
এক জায়গায় একটি পাঁচতলাসম উঁচু পর্যবেক্ষণ বা ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। এর
চূড়ায় ওঠার জন্য সিঁড়িও রয়েছে। চূড়ায়
গিয়ে পুরো জলারবনের ছবিও তুলতে পারবেন। কিংবা
চূড়ায় বসেই উপভোগ করতে পারবেন জলারবনের রূপ।
যেভাবে
যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও বিমানপথে সিলেট যাওয়া যায়। রাতারগুল যেতে হলে সিলেট শহর থেকে কোম্পানীগঞ্জের সড়ক ধরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে বা যাত্রীবাহী অটোরিকশায় প্রথমে ধোপাগুল যেতে হবে। সেখান থেকে পুনরায় অটোরিকশায় মোটরঘাট। এর ঠিক পাশেই রাতারগুলের অবস্থান। সব মিলিয়ে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ কিলোমিটারের রাস্তা। থাকার জন্য সিলেট শহর ও এর আশপাশে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে।
ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও বিমানপথে সিলেট যাওয়া যায়। রাতারগুল যেতে হলে সিলেট শহর থেকে কোম্পানীগঞ্জের সড়ক ধরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে বা যাত্রীবাহী অটোরিকশায় প্রথমে ধোপাগুল যেতে হবে। সেখান থেকে পুনরায় অটোরিকশায় মোটরঘাট। এর ঠিক পাশেই রাতারগুলের অবস্থান। সব মিলিয়ে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ কিলোমিটারের রাস্তা। থাকার জন্য সিলেট শহর ও এর আশপাশে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে।
No comments:
Post a Comment